গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ ও প্রতিকার: সুস্থ থাকার সহজ উপায়

গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ ও প্রতিকার: সুস্থ থাকার সহজ উপায়

  • 13 Aug 2024
  • Best Doctor List

গ্যাস্ট্রিক বা পেটের গ্যাস হলো সাধারণ একটি সমস্যা যা প্রায় সকল বয়সের মানুষকেই কোনো না কোনো সময়ে ভোগায়। সাধারণত আমাদের পেটের হজম প্রক্রিয়ায় গ্যাস তৈরি হয়, তবে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হলে তা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় রূপ নেয়। গ্যাস্ট্রিকের মূল লক্ষণগুলো হলো:

  • পেট ফাঁপা: গ্যাস্ট্রিকের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো পেট ফাঁপা। পেটে অতিরিক্ত গ্যাস জমে গেলে তা পেট ফুলে যাওয়ার কারণ হয়।
  • পেট ব্যথা: গ্যাস্ট্রিকের ফলে পেটের উপরের অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হয়। এটি প্রায়ই খাবার খাওয়ার পর বেড়ে যায়।
  • গ্যাস বের হওয়া: গ্যাস্ট্রিকের সময় শরীর থেকে গ্যাস বের হওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি সাধারণত পায়ু পথে বের হয় এবং এর সাথে কিছুটা গন্ধও থাকতে পারে।
  • ঢেকুর ওঠা: গ্যাস্ট্রিকের ফলে পেটে জমা গ্যাস মুখ দিয়ে বের হতে পারে, যা ঢেকুর বা বেলচিং নামে পরিচিত।
  • বমি বমি ভাব: গ্যাস্ট্রিকের সময় অনেকেরই বমি বমি ভাব হয়, যা খাবার গ্রহণের ইচ্ছা কমিয়ে দেয়।
  • অ্যাসিডিটি: পেটের অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে, যা গ্যাস্ট্রিকের একটি সাধারণ লক্ষণ।

সিরিয়াল ও ইনফরমেশন এর  জন্য কল করুন - 01902991500 (সকাল ১০:০০ টা হতে রাত  ১০:০০ টা, শুক্রবার ব্যাতিত)।
গ্যাস্ট্রিকের কারণ

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি সাধারণ কারণ হলো:

  • খাদ্যাভ্যাস: অনিয়মিত খাবার গ্রহণ, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, বেশি তেল-মসলাযুক্ত খাবার, এবং অতিরিক্ত চা-কফি পান গ্যাস্ট্রিকের কারণ হতে পারে।
  • অতিরিক্ত খাওয়া: একসাথে অনেক খাবার খাওয়া এবং খাদ্য গ্রহণের পরপরই শুয়ে পড়া গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • অতিরিক্ত মদ্যপান: অতিরিক্ত মদ্যপান পেটের গ্যাস তৈরি বাড়ায়।
  • ধূমপান: ধূমপান পেটের অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়ায়, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় রূপ নেয়।
  • মানসিক চাপ: মানসিক চাপ, উদ্বেগ, এবং দুশ্চিন্তা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে।

সিরিয়াল ও ইনফরমেশন এর  জন্য কল করুন - 01902991500 (সকাল ১০:০০ টা হতে রাত  ১০:০০ টা, শুক্রবার ব্যাতিত)।
গ্যাস্ট্রিকের প্রতিকার

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার এবং জীবনধারায় পরিবর্তন আনা যেতে পারে। নিচে গ্যাস্ট্রিকের প্রতিকারের কিছু উপায় দেওয়া হলো:

  • নিয়মিত ও সুষম খাবার গ্রহণ: নিয়মিত সময়ে সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন। একসাথে বেশি খাবার না খেয়ে ছোট ছোট পরিমাণে বারবার খাওয়া উচিত।
  • জল পান: পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
  • মসলাযুক্ত খাবার এড়ানো: অতিরিক্ত মসলাযুক্ত, তেল-মসলাযুক্ত খাবার এবং চা-কফি পরিমাণে কম খাওয়া উচিত।
  • অ্যালকোহল ও ধূমপান বর্জন: অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
  • প্রাণায়াম ও যোগব্যায়াম: নিয়মিত প্রাণায়াম ও যোগব্যায়াম করতে পারেন। এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
  • মধু ও লেবুর পানি: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানির সাথে এক চামচ মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এটি পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
  • জিরা ও মেথি: জিরা ও মেথি পেটের গ্যাস কমাতে কার্যকরী। আপনি খাবারে এগুলি ব্যবহার করতে পারেন বা এগুলির চা তৈরি করে পান করতে পারেন।
  • পুদিনা ও আদা: পুদিনা ও আদার রস গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। পুদিনার চা বা আদার চা পান করা যেতে পারে।

সিরিয়াল ও ইনফরমেশন এর  জন্য কল করুন - 01902991500 (সকাল ১০:০০ টা হতে রাত  ১০:০০ টা, শুক্রবার ব্যাতিত)।

গ্যাস্ট্রিকের ঔষধি প্রতিকার

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা যদি ঘরোয়া প্রতিকারে কম না হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ গ্রহণ করা যেতে পারে। সাধারণত গ্যাস্ট্রিকের জন্য কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, যেমন:

  • অ্যান্টাসিড: পেটের অ্যাসিড কমাতে অ্যান্টাসিড ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (PPI): পেটের অ্যাসিড উৎপাদন কমাতে PPI ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • হিস্টামিন-২ ব্লকার: পেটের অ্যাসিড উৎপাদন কমাতে হিস্টামিন-২ ব্লকার ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

হার্নিয়া কি ধরণের অসুখ, হার্নিয়া অপারেশন খরচ কত ? হার্নিয়া সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন 

উপসংহার :

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি বড় অসুবিধা হতে পারে, তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত জীবনযাত্রা, এবং কিছু ঘরোয়া প্রতিকার অনুসরণ করে আমরা সহজেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারি। যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ঘরোয়া প্রতিকারে সমাধান না হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ গ্রহণ করা উচিত। তাই, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।